জাতিসংঘ দিবস: গঠনের ইতিহাস, জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত হয় জাতিসংঘ। এর আগে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল লীগ অফ নেশন। কিন্তু লীগ অব নেশনস এর ব্যর্থতার পর বিশ্বের পরাশক্তি গুলো একত্রিত হয়ে জাতিসংঘ নামক নতুন একটি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন।জাতিসংঘে মূলত স্বাধীন রাষ্ট্রগুলো সদস্যপদ লাভ করে। এবং জাতিসংঘ এই রাষ্ট্রগুলোকে নিরাপত্তা সংরক্ষণ ও আন্তর্জাতিক শাস্তি নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন জাতি বা দেশের মধ্যে সমঅধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণ নীতির ভিত্তিতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের প্রসার এবং বিশ্বশান্তি জন্য অন্যান্য উপযুক্ত কর্মপন্থা গ্রহণ, যেমন: অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক বা মানবিক বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিকাশ সাধন এবং মানবাধিকার ও জাতিগোষ্ঠীর স্ত্রী-পুরুষ, ভাষা ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের উৎসাহদান জাতিসংঘের মূল কাজ।
জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস
জাতিসংঘের পূর্বে লীগ অফ নেশন নামে আন্তর্জাতিক সংগঠন বিশ্বের জাতিসমূহের মধ্যে শান্তি এবং সহযোগিতার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯২০ সালের ১০ ই জানুয়ারি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শান্তি এবং নিরাপত্তা সংস্থা লীগ অফ নেশন ৫৮ টি দেশ নিয়ে গঠিত হয়। শুরুতেই লীগ অফ নেশন কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালিত হলেও ১৯৩০ সালের পর থেকে জার্মানি, ইতালি এবং জাপানের মত অক্ষয় শক্তির দ্বারা প্রভাবি ত হয়১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হলে লীগ অফ নেশন কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়ে। এবং ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে লীগ অফ নেশন বিশ্ব শান্তি রক্ষার প্রধান লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়। এরপর বিশ্বের বড় বড় নেতাদের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার অভাব ভীষণভাবে অনুভূত হয়। এ থেকে জাতিসংঘ সৃষ্টিতে বিশ্বনেতাদের একত্রে বৈঠকের ফলে তৈরি হয় জাতিসংঘ। জাতিসংঘ নামের প্রথম সূচনা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট এর দ্বারা।
১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৬ শে জুন সানফ্রান্সিসকোতে আন্তর্জাতিক সংগঠন প্রশ্নে জাতিসমূহের সংগঠন ৫০ টি দেশের প্রতিনিধিরা জাতিসংঘ সনদ রচনা করেন। ১৯৪৪ সালে আগস্ট, অক্টোবরে ওয়াশিংটনের ডাম্বারটন বক্সের বৈঠকে চীন, ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি প্রস্তাব গুলির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ৫০ টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধি ১৯৪৫ সালের ২৬ জুন অনুমোদন ও স্বাক্ষর করেন। পোলান্ড সম্মেলনে উপস্থিত না থাকলেও, পড়ে এতে স্বাক্ষর প্রদান করেন প্রথম স্বাক্ষরকারী ৫১ টি রাষ্ট্রের একটিতে পরিণত হয়।১৯৪৫ সালের ২৫ শে অক্টোবর চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্, যুক্তরাজ্য ও স্বাক্ষরকারী অন্যান্য অধিকাংশ দেশের অনুমোদনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘ দিবস কবে পালন করা হয়?
ইন্টারনেটে এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর অনেকে অনুসন্ধান করে থাকেন। তাই খুব সহজে আমি এই প্রশ্নের উত্তর সংযুক্ত করছি। জাতিসংঘ দিবস ২৪ শে অক্টোবর তারিখে বিশ্বের সকল স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে উদযাপিত হয়। সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে জাতিসংঘ সনদ অনুমোদনের দিনে ১৯৪৮ সালের এ দিবস পালনের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ কবে জাতিসংঘ সদস্যপদ লাভ করে?
১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। ১৩৬ তম দেশ হিসেবে ২৯ তম জাতিসংঘের অধিবেশনে বাংলাদেশ যোগদান করে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের কততম সদস্য – ১৩৬ তম । এছাড়াও হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ৪১ তম অধিবেশনে প্রথম বাঙালি হিসেবে জাতিসংঘের সভাপতিত্ব করেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম বাঙালি হিসেবে আনোয়ারুল করিম চৌধুরী সভাপতি ছিলেন।
জাতিসংঘ দিবসের শুভেচ্ছা
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এবং যুদ্ধ-বিগ্রহ সংগ্রামকে পরিত্যাগ করে শান্তির পথে মানুষকে ফিরিয়ে আনার জন্য যথাযোগ্য মর্যাদায় মানুষ জাতিসংঘ দিবস পালন করে। এদিন জাতিসংঘ দিবস উদযাপন উপলক্ষে একজন আরেকজনকে এসএমএসের মাধ্যমে শুভেচ্ছাবার্তা জানায়। নিচে আমি জাতিসংঘ দিবসের শুভেচ্ছা জানানোর কিছু এসএমএস সংযুক্ত করলাম।
এই নিবন্ধে আমরা বিভিন্ন দিবস সম্পর্কে আলোচনা করে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত বিভিন্ন দিবসের আপডেট পেতে চান তাহলে নিবন্ধটির সাথেই থাকবেন ধন্যবাদ।